একপাশে পাহাড় আর অন্য পাশে বিশাল সমুদ্র। কক্সবাজারের মেরিন ড্রাইভের নান্দনিক ও নৈসর্গিক সৌন্দর্য্য উপভোগ করে এবার সেন্টমার্টিন যেতে পারবে পর্যটকেরা। নীল জলরাশির ছোঁয়া নিয়ে রোমাঞ্চকর সমুদ্রযাত্রায় উন্মোচন হলো ব্লু ইকোনমি ট্যুরিজমের দ্বার। উখিয়ার ইনানী রয়েল টিউলিপের সামনে সমুদ্রসৈকতে নির্মিত নৌবাহিনীর নান্দনিক জেটি থেকে এই প্রথমবারের মতো ১৩৯ জন যাত্রী নিয়ে সেন্টমার্টিন গেল প্রমোদতরী এমভি কর্ণফুলী এক্সপ্রেস। রবিবার (৩১ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে জাহাজটি প্রবাল দ্বীপের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়।
এ সময় কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্সের এমডি বিশিষ্ট পর্যটন উদ্যোক্তা এম এ রশিদ, কর্ণফুলী এক্সপ্রেস কক্সবাজারের ব্যবস্থাপক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর, টুয়াকের সাবেক সভাপতি আনোয়ার কামাল, সাধারণ সম্পাদক নুরুল কবির পাশা পল্লবসহ জাহাজ ও পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী এবং উদ্যোক্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে কক্সবাজার শহরের বিআইডব্লিউটিএ ঘাট থেকে চলতো জাহাজটি। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত পর্যটকরা কর্ণফুলীর যাত্রী হতে পেরে বেশ আনন্দিত দেখা গেছে। নৈসর্গিক এলাকা থেকে জাহাজ চালু করায় বেশ উচ্ছ্বসিত তারা।
কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্সের এমডি এম এ রশিদ বলেন, 'বছরের শেষ দিনে পরীক্ষামূলকভাবে জাহাজটি চালু করা হয়েছে। আগামী ১১ জানুয়ারি থেকে পুরোদমে চলবে। ঘাটের অভাবে অনেক ক্রুজ শিপ এতদিন কক্সবাজারে ভিড়তে পারেনি। অবস্থানের সুযোগ ছিল না। নৌবাহিনীর জেটিটি ব্যবহারের মাধ্যমে নতুন দিগন্তের উন্মোচন হলো।
ইনানী থেকে সরাসরি সেন্টমার্টিন নৌরুটে জাহাজ চলাচল শুরু হওয়ায় এখানকার পর্যটন আরো সমৃদ্ধ হবে। বিভিন্ন দেশ থেকে পর্যটক আসবে। সরকার রাজস্ব পাবে। পর্যটনে আরো এগিয়ে যাবে কক্সবাজার, এমনটি মনে করেন এমএ রশিদ।
বিশিষ্ট পর্যটন উদ্যোক্তা ও কর্ণফুলী এক্সপ্রেস কক্সবাজারের ব্যবস্থাপক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, 'ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনাসহ সারা দেশ থেকে পর্যটকরা জাহাজে করে সরাসরি কক্সবাজার আসতে পারবে। সাগরের নীল জলরাশির উপর জেটির অবস্থান বেশ সুন্দর ও নান্দনিক হয়েছে মন্তব্য করেন হোসাইন ইসলাম বাহাদুর। এই জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
তিনি আরো বলেন, এমভি কর্ণফূলী এক্সপ্রেস ১১ জানুয়ারি থেকে প্রতিদিন সকাল ৯টায় ইনানী জেটিঘাট ছাড়বে। সেন্টমার্টিন পৌঁছবে দুপুর সাড়ে ১২টায়। বিকাল ৩টায় দ্বীপ থেকে জাহাজ ছাড়বে। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় নৌবাহিনীর জেটিতে পৌঁছাবে।
সূত্র মতে, ২০২২ সালের ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক নৌ মহড়া প্রদর্শনের জন্য ইনানী সৈকতে নৌ বাহিনী এই জেটি নিমার্ণ করেন। যে আন্তর্জাতিক মহড়ায় প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সমুদ্র নিরাপত্তার জন্য নৌ বাহিনীর অধিনে ইনানীর এই জেটিটি পরিচালিত হয়ে আসছে। আর এটা দিয়ে সেন্টমার্টিন যাত্রা ভিন্নরূপে পর্যটকরা উপভোগ করবেন বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার পর্যটন শিল্প সমিতির সভাপতি বেলাল আবেদিন ভুট্টো।
তিনি বলেন, ইনানী থেকে সেন্টমার্টিন কর্ণফুলী এক্সপ্রেসের নতুন রূট চালুর মধ্য দিয়ে পর্যটনের সম্ভাবনার নতুন দ্বার উন্মোচন হতে যাচ্ছে। এটার মাধ্যমে পর্যটকরা মেরিন ড্রাইভ - ইনানী সৌন্দর্য উপভোগের পাশাপাশি ঝামেলা মুক্তভাবে স্বল্প সময়ে সেন্টমার্টিন যাওয়া আসা করতে পারবে। এর মাধ্যমে পর্যটক আরো বৃদ্ধি পাবে বলে মন্তব্য করেন।